কার্টুনের মৌলিক বিষয়: কিভাবে একটি কার্টুনের মুখ সঠিকভাবে আঁকতে হবে
Bengali (বাংলা) translation by Bint Salim (you can also view the original English article)



যখন কার্টুনের কথা আসে, তখন শিশুরাই মূলত এর প্রধান দর্শক। একজন ভাল কার্টুনিস্ট কোনও বস্তুর সার নির্যাস বের করে কোন বস্তু বা মানুষের এমন সহজ সরল আকৃতি দিয়ে থাকেন যা একটি শিশুও খুব সহজেই বুঝতে পারে এবং ঐ বস্তুটির দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে থাকে। এ বিষয়ে শিশুর মনস্তাত্ত্বিক উপলব্ধির ব্যপারে পারঙ্গম যেমন ওয়াল্ট ডিজনি, হান্না এন্ড বারবারা, চাক জোন্স, জিম হেনসন, ওয়াল্টার লানৎয এবং আরও অনেকের কাজ অধ্যয়ন করে দেখা যেতে পারে যারা তাঁদের জাদুকরী ও পরাবাস্তব চরিত্র দিয়ে সারা বিশ্বকে মোহিত করে রেখেছেন।
এখানে আমার ভূমিকা হচ্ছে সঠিকভাবে এই রহস্যের জট খুলতে ও বুঝতে আপনাকে সাহায্য করা এবং উপস্থাপিত টেকনিকগুলো ব্যবহার করে যেকোনো চরিত্র তৈরি করার পদ্ধতি শিক্ষাদান করা। আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিচ্ছি যে, আপনি জেনে আশ্চর্য হবেন যে একটি কার্টুন অভিব্যক্তি তৈরি করা কতটা সহজ যা শিশু (এবং বয়স্ক) দের দ্বারা সমাদৃত হয়ে থাকে!
মানুষের উপলব্ধি বোঝা
মানব সত্তার একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য আছে: আমরা একটি জটিল বিষয়কে খুব সাধারণ কাঠামো বা বস্তুতে রুপান্তরিত করতে পারি। এই পদ্ধতিতে আমরা যেকোনো কিছু মাত্র কয়েকটি বক্র রেখা ও জ্যামিতিক আকৃতির মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারি।
আপনি কি আমাকে বলতে পারবেন যে, নীচের দুটি ইমেজ একই বস্তুর প্রতিনিধিত্ব করছে কিনা?



দেখতে যতই অদ্ভুত মনে হোক না কেন, আপনি উভয় চিত্রের ক্ষেত্রেই বলবেন "এটা একটা গাড়ি"।
এক্ষেত্রে যা ঘটে তা হচ্ছে, আর্টিস্টরা ছাড়াও, অনেক মানুষ তাঁদের স্মৃতিশক্তির প্রয়োগ করে কোনও একটি গাড়ি, একটি কুকুর অথবা এমনকি একটি শিশুকেও আঁকে না। তাই তাঁরা একটি বস্তুকে খুব মৌলিক কিছু বৈশিষ্ট্য ও আকার দ্বারা চিহ্নিত করে থাকে। ৪, ৫, অথবা ৬ বছরের কতজন শিশু আছে, যারা স্কুলের খাতায় দুটি বৃত্ত এঁকে টুথ পিক দিয়ে কাগজে সাজায় এবং বলে থাকে: "এটা মা এবং বাবা!"?



১। আমাদের প্রথম চরিত্র তৈরি করা
কার্টুনের বেসিক আকৃতি হচ্ছে একটি বৃত্ত। বৃত্ত (ভালবাসার পাশাপাশি, অবশ্যই) আপনার প্রয়োজন হয়। এই বৃত্তটি থেকে আপনি আপনার কার্টুন চরিত্রের মাথার মৌলিক অনুপাত বের করবেন।



বৃত্ত তৈরি হয়ে গেলে, এবার মুখের অক্ষ ট্রেসিং করার সময়। একটি উলম্ব এবং আনুভূমিক রেখা অংকন করুন যা মাঝখানে ছেদ করবে, নীচের চিত্রের মত করে:



ধাপ ১
চোখ তৈরি করতে, উপরের দিকে একপাশে কিছুটা ঢালু রেখে একটি ডিম্বাকার আকৃতি তৈরি করুন। বিপরীতদিকে একই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি করুন। চোখের মত করে তাঁদের মাঝখানে কিছু ফাঁকা জায়গা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমরা খসড়া পর্যায়ে আছি তাই দুটি চোখের মধ্যখানে আরেকটি চোখ এঁকে পরিমাপ সমন্বয় করতে পারেন।



ধাপ ২
বৃত্তের উপরের দিকে টানা অংশটি কিছুটা ঘন করে দিন, এটা হবে আমাদের চরিত্রের চোখের পাপড়ি। চোখের উপরের একটা ভ্রু কিছুটা তুলে স্থাপন করুন যাতে কিছুটা আশ্চর্যজনক অভিব্যাক্তি প্রকাশ পায়। ভ্রুয়ের আকৃতি যেমন ইচ্ছা তেমন দেয়া যায় এবং আপনি অনুশীলনের মাধ্যমে নিজস্ব স্টাইলের সমন্বয় করে নিতে পারেন।
চোখের মনিটা কিছুটা কেন্দ্রের দিকে এনে আঁকুন (এটা প্রধান কার্টুনিস্টদের একটি অন্যতম কৌশল যার মাধ্যমে আমরা আমাদের চরিত্রটিকে দেখতে সুন্দর বানাতে পারি)।



টিপস: আরো কিছুটা প্রানবন্ত এবং "বাস্তব" করে তুলতে আমাদের চোখের নীচে আমরা ছোট্ট একটি দাগ টেনে দিতে পারি যা দেখতে অনেকটা রিঙ্কেলের মত দেখাবে। এটা হচ্ছে আরেকটি আকর্ষণীয় কৌশল যা আমাদের মুখের অভিব্যক্তির বিশেষ পরিবর্তন ঘটায়।



ধাপ ৩
আমরা এইমাত্র পুরো কোর্সের সবচেয়ে স্বাধীন সৃজনশীল অংশে পদার্পণ করলাম। এই ভাবে চিন্তা করুন: যদি কার্টুন স্টাইল ডিজাইনে, একটি মুখের মূল কাঠামো চরিত্রটির খুলি এবং চোখের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয় তাহলে কেমন দেখাবে। এটা হচ্ছে সেই পর্যায় যেখানে আপনি বহির্বিশ্বের সঙ্গে একটি পরিচয়কে সংজ্ঞায়িত করবেন, যেমন, মানুষের কাছে ইতিমধ্যেই এটা পরিষ্কার যে আপনি চরিত্র আঁকতে যাচ্ছেন।
এখন আমরা চোয়ালের অংশে এসেছি, এখন এই সিদ্ধান্ত নিবো যে আমরা কি মোটা চরিত্র চাই নাকি চিকন। তা হতে পারে বয়স্ক, যুবক এবং অন্যান্য। আমার চরিত্রটি কম বয়স্ক একজনের। তাই, আসুন তার জন্য একটি সঠিক চোয়াল আঁকি।



ধাপ ৪
যখন সামনের দিক থেকে দেখা যায় এমন নাক অংকন করবেন, তখন সাধারণত খুব বেশী কিছু অংকন করবেন না। যদি আপনি শুধুমাত্র নাকের আগা আঁকেন তাহলে এটা ইতিমধ্যেই দর্শককে আশ্বস্ত করতে সক্ষম হবে। সাধারনতঃ নাকের একপাশ অংকন করাই সচরাচর দেখা যায়, এই ধারণাটি আলোর বিপরীত দিকটি ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে এসেছে।
চলুন এবার আমাদের চরিত্রের জন্য সঠিক নাক স্থাপন করা যাক।



ধাপ ৫
যেহেতু আমাদের চরিত্রটি একটি শিশুর, তাই আমরা এখন একটি কার্টুনের মুখ আঁকবো: খুব সাধারণ কিছু যেটা দিয়ে একটি নিষ্পাপ ভঙ্গিমা ফুটিয়ে তোলা হয়।
লক্ষ্য করুন যখন বাচ্চাটির মুখ আঁকতে হবে, তখন ঠোঁট আঁকা উচিত হবে না! কার্টুন স্টাইলে, বাচ্চা, লিঙ্গ নির্বিশেষে, সবারই খুব সাধারণ মুখ থাকে। এক্ষেত্রে একটি যুতসই ও ভাবপূর্ণ চিহ্ন ইতিমধ্যেই আঁকা হয়েছে।



ধাপ ৬
কানগুলো সামনের দিক থেকে দেখা যাচ্ছে (কারণ আমাদের চরিত্রটি ক্যামেরার সম্মুখে আছে), একারণে কানের ভিতরের অংশ এখানে দেখানো হবে না। তাহলে আমরা মৌলিক দৃষ্টিকোণ থেকে কানের খুব সাধারণ একটি আকৃতি আঁকতে চেষ্টা করি (এ ব্যপারে পরে আরও কিছু করবো)।



ধাপ ৭
আমাদের মাথার খুলিটা প্রথমে আঁকা বৃত্ত দ্বারাই তৈরি হয়ে গেছে, তাই না? তাই এখন আমরা খুব সাধারণ এবং বাচ্চাসুলভ একটি চুলের ছাঁট দিবো, যাতে ছেলেটি প্রানবন্ত হয়ে উঠে। চলুন, তাহলে এখন এটা করা যাক।



আমি জানি না কীভাবে চুল আঁকতে হয়! সাহায্য করুন!
সহজ, খুবই সহজ... এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নিখুঁত চুল আঁকতে কারো স্টাইল বিশেষজ্ঞ বা ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার প্রয়োজন নেই। চুল আঁকার কোনও বাঁধাধরা নিয়ম নেই, তাই যতক্ষন না আপনার পছন্দের চুলের ছাঁট পাচ্ছেন, ততক্ষন চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। শুধু মনে রাখবেন, চুলের কাট আমাদের চরিত্রটির ব্যক্তিত্বকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য দায়ী থাকবে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, চুল আমাদের বয়স, বিদ্রোহ, রক্ষণশীলতা...অবিশ্বাস্যভাবে প্রকাশ করে থাকে, তাই নয় কি? তাহলে কি বলতে হবে... আপনার চুলের স্টাইল কি?! ওহো, রাগ করবেন না...
কার্টুনের চুল আঁকার জন্য সবচেয়ে সঠিক এবং দ্রুত উপায় হচ্ছে ওয়েবে এই ধরণের ছবির উদাহরণ দেখা! আমি এটা সব সময়ই করি: একটি ফ্যাশন ম্যাগাজিন নিয়ে বসি অথবা গুগলে সার্চ দিয়ে দেখি। আদর্শ স্টাইল খুঁজে পাওয়ার পর, ইমেজটি আমার ড্রয়িং বোর্ডের (অথবা ট্যাবলেটের) পাশে রাখি এবং একটি কার্টুন তৈরি করতে শুরু করি এবং এটার খুব সহজ সরল সংস্করন আঁকতে চেষ্টা করি।
ভাল, মনে হচ্ছে আমরা আমাদের চরিত্রটিকে সফলভাবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি! অভিনন্দন!
এখন চলুন আরও একটু খেলা যাক এবং ছোট্ট টমির (হ্যা, আমি ওর জন্য একটি নাম দিয়েছি) জন্য ব্যবহৃত একই টেম্পলেট ব্যবহার করে আমরা সম্পূর্ণ অন্যরকম একটি চরিত্র তৈরি করি।
২। একটি বয়স্ক চরিত্র তৈরি করা
ধাপ ১
স্বাভাবিকভাবে, চোখের মাধ্যমে শুরু করা যাক। এই সময় আমরা রিঙ্কেল, ভ্রু এবং চোখের মনি সব কিছুই দ্রুত আঁকবো।
লক্ষ্য করুন যে আমরা খুব বেশী পরিবর্তন করি নাই, আমরা শুধু ভ্রু দুটি কিছুটা বিস্তৃত করেছি। বুড়ো মানুষের ভ্রু হালকা থাকে, এবং কপালটা অনেকটা চওড়া থাকে। চোখের পাপড়ির ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য কোনও পরিবর্তন নেই, এগুলো সব সময় একইভাবে আঁকতে হবে।



ধাপ ২
আমরা এই সময় থুঁতনিটা কিছুটা লম্বা করবো। এটার মত করে কিছু একটা তৈরি করুন।
আমাদের চরিত্রটি ইতিমধ্যেই অন্যরকম "দেখাচ্ছে"! বেশ ভালো। এবার আমরা এটার জন্য আদর্শ নাক পছন্দ করে অগ্রসর হতে পারি।



ধাপ ৩
পূর্বে যেমন করেছি, চলুন সেইমতে একটি নাক তৈরি করি এই সময় আমি আগেরটি থেকে একেবারে ব্যতিক্রম একটি নাক তৈরি করেছি:
খেয়াল করুন নাকের প্রান্তটি একেবারে চোখের নীচে খুব কাছাকাছি ভাবে স্থাপন করা হয়েছে। যখন বড় এবং প্রশস্ত নাক আঁকতে হবে তখন এটা খুব কার্যকর একটি কৌশল। ভালো ফলাফল পেতে এই পদ্ধতিটি কম-বেশী বাড়িয়ে কমিয়ে নিতে পারেন!



আরও একটু অন্যরকম করতে, চলুন আমাদের চরিত্রটির মুখে আরো কিছু যোগ করি...
ধাপ ৪
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি মুখ আঁকার পরিবর্তে: অন্য একটা টেকনিক ব্যবহার করবো, এক্ষেত্রে আমরা বড় একটি মোচ এঁকে আমাদের চরিত্রটিকে আরও একটু ব্যক্তিত্বসম্পন্ন করে তুলতে পারি।
হয়ে গেলো! আমাদের বয়স্ক বন্ধুর জন্য একটি বড় এবং অতিরঞ্জিত মোঁচ!



ধাপ ৫
মনে আছে কি আমি যে বলেছিলাম চুল আমাদের বয়স ও ব্যক্তিত্বকে উপস্থাপন করতে সহায়তা করে? এবার পরীক্ষা করুন।
আমরা এবার দুইপাশে কিছু চুল যোগ করবো এবং তার মাথার উপরটি টাক রেখে দিবো। আশ্চর্যজনকভাবে এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারা তৈরি করলো, তাই না? এছাড়াও লক্ষ্য করুন আমি টমির মত একই রকম কান দিয়েছি, আমাদের লক্ষ্মী ছেলে। এটাই হচ্ছে টেম্পলেটের উপর কাজ করার সুবিধা। এটাই হচ্ছে কার্টুনের জাদু!



৩। একটি মহিলা চরিত্র তৈরি করা
আমি জানি না... আমার মনে হয় টমির একটি বোন প্রয়োজন! সে এখানে খুবই একা। চলুন তার জন্য একটি বোন তৈরি করি, আগের মতই জাদু দিয়ে:



হেই!!! তুমি এত তাড়াতাড়ি এটা কীভাবে করলে? খুব সহজ ... মহিলাদের মুখের কাঠামো বেশ নাজুক। নিচের ধাপে ধাপে নির্দেশনাটি অনুসরণ করুন:
- পাতলা দুটি ভ্রু;
- বড় এবং ভাবপূর্ণ চোখের পাপড়ি;
- চিকন থুঁতনি;
- ছোট্ট হালকা পাতলা নাক;
- বড় চুল (একটি বাস্তবসম্মত উদাহরণ ব্যবহার করুন এবং পছন্দমত যেকোনো স্টাইল বেছে নিন)।
এটুকুই। এগুলোই হচ্ছে সব পরিবর্তন যা আপনাকে করতে হবে। এর পাশাপাশি, আমি তার ভাই টমি থেকে যতটা সম্ভব নিতে পারি। সর্বোপরি, তাঁরা সহোদর, তাই না?
যখন আপনি কিছুটা স্বচ্ছন্দ অনুভব করবেন, তখন আস্তে ধীরে আপনার চরিত্রগুলোতে আরও কিছু "বাস্তবসম্মত" অনুষঙ্গ যোগ করতে পারেন। যেমন কিছুটা বড় চোখের মণি...



৪। মুখের অভিব্যক্তি
আমরা আমাদের প্রিয় লুসির আরও কিছু আবেগ যোগ করার জন্য প্রস্তুত (হ্যাঁ, এটা তার নাম)। তাঁদের স্কুলের ছুটির দিন শেষ হয়েছে এই খবর পাওয়ার পর চলুন তাঁকে আঁকা যাক...



এবারও আমরা একেবারেই ব্যতিক্রম কিছু অর্জন করেছি শুধুমাত্র দুটি জিনিস যোগ করেছি: অশ্রু এবং অন্যরকম মুখাকৃতি! এটা আশ্চর্যজনক নয় কি?!
এখন চলুন টমির কাছে ফিরে যাই এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করি সে এ ব্যপারে কি ভাবছে:



লক্ষ্য করুন আমি তার অভিব্যক্তি সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছি শুধুমাত্র নীচের কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে:
- একটি ভ্রু অন্য ভ্রু থেকে কিছুটা নিচু করে তৈরি করা;
- চোখের পাপড়িগুলো অর্ধেক নামিয়ে আনা;
- একটি হাসি যুক্ত করা (একটা পার্শ্ব কিছুটা উঁচু হয়ে যাবে, ভ্রুয়ের কাছাকাছি);
- চোখের মণিগুলো কিছুটা উপরে উঠানো যাতে এগুলোর অর্ধাংশ চোখের পাপড়ির নীচে থাকে।
এবং এটুকুই! আমরা এই কয়েকটি পরিবর্তন করেই প্রত্যাশিত ফলাফল পেয়েছি। চুল, কান, নাক, থুঁতনি এবং চোখের গোলাকার গঠন একই রকম রয়ে গেছে! এটা খুবই সহজ!
৫। প্রোফাইল দেখুন
নীচে আবারো আরেকটি টেম্পলেট আঁকুন। এখন আমরা শিখবো কীভাবে টমি এবং লুসিকে প্রোফাইল ভিউ থেকে তৈরি করতে হয়:



আমরা এখন উভয়ের মুখ মাপসই করে আঁকবো:



পার্শ্ব থেকে তুলনা করার সময় দুটি কাঠামোর মূল পার্থক্য সম্পর্কে সচেতন থাকুন। পুরুষ এবং মহিলা চরিত্র আঁকার সময় এই বিষয়গুলো লক্ষ্য করুন:
- টমির ভ্রু কিছুটা মোটা
- লুসির চিবুক মুখের সামনের দিকে কিছুটা অভিক্ষিপ্ত
- লুসির নাক পাতলা এবং জায়গামত;
- লুসির বড় বড় মেয়েসুলভ পাপড়ি আছে।
৬। কোণ নিয়ে খেলা
চোখ, নাক, মুখ, কান...সবকিছু যা দিয়ে মুখ তৈরি হয় তা দেখতে পরিবর্তন হয়ে যায়, যখন বিভিন্ন কোণ থেকে দেখা হয়। সাধারণত দেখা যায় কার্টুন চরিত্রগুলো সম্ভব প্রতিটি দিক থেকে ক্যামেরার বিভিন্ন কোণ থেকে দেখা যায়, কারণ তাঁদের চারপাশের বস্তু এবং অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদেরকে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয়। এটা তাঁদেরকে আরও প্রানবন্ত করে তুলতে সাহায্য করে!









এখন আমরা এই পর্যন্ত যা শিখেছি তার সবগুলোই অনুশীলন করবো...নিচে একটি প্রাথমিক টেম্পলেট অনুসরণ করা হয়েছে (শুধুমাত্র বৃত্ত এবং নির্দেশনামূলক গাইডগুলো) যেগুলো দিয়ে আমরা বিভিন্ন অবস্থান থেকে আমাদের ড্রয়িং স্কিলগুলো অনুশীলন করতে পারি:



চলুন এবার বৃত্তগুলোর নির্দেশনা অনুসারে চোখের চিহ্ন আঁকা যাক...



চলুন তাহলে এখন কিছু সাধারণ চোয়াল আঁকা যাক, কয়েকটি সাইজ এবং আকৃতিতে...



এটা এখন আপনার উপর নির্ভর করছে। আমি মনে করি আপনি এখন একা একা এগিয়ে যেতে পারবেন এবং আমার দেয়া কৌশলগুলো অনুসরণ করে অংকন সম্পূর্ণ করতে পারবেন। মনে রাখবেন, কার্টুন স্টাইলের মাত্র দুটি সূত্র আছে:
- মুখের বিবরণ গোলাকার আকৃতির মাধ্যমে সরলীকরণ করা;
- মুখের অভিব্যাক্তি বাড়িয়ে দেখানো।
যখন আপনি চোখের দিক ও থুঁতনির আকার নির্ধারণ করবেন, তখন থেকেই আপনার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে যতটা সম্ভব মুখ তৈরি করতে চেষ্টা করুন। এ ব্যপারে নিশ্চিত হতে পারেন যে, যদি আপনি এখানে দেখানো কৌশলগুলো প্রতিদিন দশ মিনিট অনুশীলন করেন, তাহলে খুব সহজ ও প্রাকৃতিকভাবেই কার্টুনের মুখ আঁকতে পারবেন।
চলুন সারাংশ বের করি! আমি টিউটোরিয়াল জুড়ে আমি যে কথাগুলো বললাম তা দৃঢ়ভাবে করতে ও কার্টুনের মুখ সঠিকভাবে আঁকতে পদক্ষেপগুলো মনে রাখা যাক:
- একটি বৃত্ত তৈরি করুন যা আমাদের চরিত্রের খুলি উপস্থাপন করবে;
- যেদিকে আপনার চরিত্রটি তাকিয়ে থাকবে সেদিকে দিক নির্দেশ করুন এবং কিছু গাইডলাইন আঁকুন;
- চোখের বহিরেখাগুলো ডিম্বাকৃতির আকৃতি দিয়ে আঁকুন;
- চোখের মণি আঁকুন (এগুলোকে নাকের কাছাকাছি নিয়ে আসুন, যদি আপনি একটি বুদ্ধিমান চরিত্র চান)। চোখের পাপড়ির কথা ভুলবেন না;
- সঠিক ভ্রু নির্বাচন করুন, আপনার চরিত্রটির বয়স ও লিঙ্গের উপর নির্ভর করে;
- সঠিক চোয়াল আঁকুন;
- সহজ সরল কান আঁকুন;
- গুগলে (অথবা একটি ম্যাগাজিনে) চুলের ছাঁটের স্টাইল খুঁজুন এবং এটাকে আপনার স্কেচের গাইড রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করুন;
- উদযাপন করুন!
নিচে আমার সংস্করণ:






৭। কয়েকটি জাতিগত গবেষণা
আমরা আমাদের টিউটোরিয়ালের শেষের কাছাকাছি। শেষ টিপস হিসেবে, আমি আপনাকে মুখের বিভিন্ন অভিব্যক্তি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে বলবো, এবং যখনই সম্ভব হবে মুখের অঙ্গভঙ্গি নিয়ে আরও বিস্তর গবেষণা করবেন। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে চোখ এবং মুখ কীভাবে নাড়ানো হয় তা শিখুন। বিভিন্ন জাতির মৌলিক মুখভঙ্গি গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখুন।



যখনই সম্ভব হয় আপনার চরিত্রটিকে কিছুটা বাস্তবরূপ দেয়ার চেষ্টা করুন। বাস্তব জীবনে মানুষের ব্যবহার-আচার লক্ষ্য করুন। ছবি দেখুন, আপনার প্রিয় আর্টিস্টের স্টাইল পর্যালোচনা করুন অথবা অনুপ্রেরণা পাবার জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করুন। যখন আমরা বাস্তব জীবনে এসব দেখবো তখন খুব সহজেই ড্রয়িংয়ের জন্য মান সম্মত সারনির্যাস বের করে আনতে পারবো। কিন্তু মনে রাখবেন: বাস্তব জীবন পর্যালোচনা করা মানে নকল করা নয়! আপনি আপনার চরিত্রটিকে নিশ্চয়ই অনন্য রাখতে চান এবং বাস্তব জীবনের নকল হিসেবে চান না, তাই নয় কি?
দারুন কাজ! এমন আরো অনেক আছে!
এখন আপনি প্রাথমিক কৌশল সম্পর্কে জানলেন যা বিশ্বের সেরা কার্টুন আর্টিস্টরা ব্যবহার করে থাকেন। আরও অনেক কিছু জানার বাকি আছে এবং আমি আপনাকে এতক্ষন যা জানালাম তা হচ্ছে কার্টুন ড্রয়িং টিউটোরিয়ালের একটি ক্ষুদ্র অংশ। এরপর, আমরা কার্টুনের অভিব্যক্তির প্রকাশ নিয়ে আরও গভীরে যাবো।






Unlimited Downloads.
